প্রশ্নটি যদি বিশুদ্ধ বাংলাতেই করা হয়ে থাকে যে, ‘সপ্তাহে কেন সাতটি দিন?’ তাহলে, জবাবে বলতে হয় যে, সপ্তাহে সাতটি দিন হবে সেটাই কি স্বাভাবিক নয়? কারণ, বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে, আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে- সমাসের নিয়মানুসারে, ‘সপ্তাহ’ এর ব্যাসবাক্য হচ্ছে ‘সপ্ত অহের (দিনের) সমাহার’। সে হিসেবে বলতে গেলে তো সপ্তাহে সাত দিনই থাকবে।
ইংরেজি ‘উইক’ (বাংলা অনুবাদে সপ্তাহই বলতে হচ্ছে) বলতেই যে, বর্তমান কালের সাত দিনের সমষ্টি বোঝায়- তা কিন্তু নয়। প্রাচীন কালে নানা দেশে নানা কালে আট দিনের সপ্তাহ, নয় দিনের সপ্তাহ এমনকি দশ দিনের সপ্তাহও প্রচলিত ছিলো। আবার ওদিকে ছয় দিনের সপ্তাহ বা পাঁচ দিনের সপ্তাহও কোথাও কোথাও প্রচলিত ছিলো।
প্রাচীন রোমে ‘আট দিনের’ সপ্তাহ চালু ছিলো। আমাদের এখনকার মতোই সাত দিন, আর অতিরিক্ত একটা দিন বরাদ্দ ছিলো বিকি-কিনি করবার জন্যে। বেচা-কেনা করবার এই দিনটি ‘হাটবার’ নামে পরিচিত ছিলো। পরে অবশ্য খ্রিস্টান অধ্যুষিত হবার পর রোমানদের ওখানে নতুন ক্যালেন্ডার চালু হয়, আর খ্রিস্ট-ধর্মের প্রভাবে হাটবার বাদ দিয়ে সাত দিনেই সপ্তাহ নির্ধারিত হয়। ৩২১ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট কন্সট্যান্টাইন এই নতুন ক্যালেন্ডার চালু করে সপ্তাহের দিন সংখ্যা ৭ এ নির্দিষ্ট করেন।
ঘুরে-ফিরে দেখা যাচ্ছে, সপ্তাহের মূল ধারণাটা সাত দিনকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে। কী গ্রিক, কী ভারতীয় কিংবা অন্য কোনো সভ্যতা, প্রায় সব ধরনের পৌরাণিক শাস্ত্রমতে, ‘সাত’ সংখ্যাটি কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বলে কিন্তু পৌরাণিক কোনো বিশ্বাসজনিত কারণে সপ্তাহে সাতটি দিন রাখা হয়েছে- এমনটি নয়। বরং, ক্যালেন্ডার তৈরি করতে গিয়ে প্রাচীন গণিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যে নিখুঁত হিসেব-নিকেশ করেছেন, তারই একটি অংশ হিসেবে সপ্তাহের দিন সংখ্যা ৭ এ এসে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাস :
পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায়, সর্বপ্রথম ব্যাবিলনীয় সভ্যতার লোকেরা সময়ের হিসাব রাখা শুরু করে। অর্থাৎ, ক্যালেন্ডার প্রচলনের ইতিহাস ব্যাবিলনীয় সভ্যতা থেকে। তারা দিন ও মাসের হিসাব রাখতো মূলত চাঁদের গতিবিধি দেখে।
সূর্যের তুলনায় চাঁদের গতিবিধি দেখে মাসের হিসাব রাখা অনেক সহজ। কারণ, চাঁদের আকৃতি সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়। কখনো এক ফালি চাঁদ, কখনো জোছনামাখা ভরাট পূর্ণিমা আবার কখনো অমাবস্যার রাতে সম্পূর্ণভাবে তিরোধান! চাঁদের এই ঘটনাগুলো আবার প্রায় ৩০ দিন পর পর পুনরাবৃত্ত হতে থাকতো। অনেক অনেক দেখে-শুনে প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রা চাঁদের গতিবিধির এই কারসাজি বুঝে গেলো এবং চাঁদের উপর ভিত্তি করে মাস গণনা শুরু করলো।
হিসাবের সুবিধার জন্য প্রতিটি চান্দ্রমাসকে আবার চন্দ্রকলার [1] ভিত্তিতে কয়েকটি সময়কালে বিভক্ত করা হলো। যেমন:
১। প্রথম দিন: চাঁদ মাত্রই উঠলো। একদম এক ফালি চাঁদ। পশ্চিমাকাশে খুব সূক্ষ্মভাবে তাকালে দেখা যায়।
২। সপ্তম দিন: চাঁদের আকার বাড়তে বাড়তে অর্ধগোলকে পরিণত হয়।
৩। চতুর্দশ দিন: চাঁদের আকার বাড়তে বাড়তে পূর্ণ গোলকে পরিণত হয়। চার দিকে ঝলমলে স্নিগ্ধ আলো ছড়ায় এই পূর্ণিমা চাঁদ। এর পর থেকেই চাঁদের আকার ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে।
৪। একবিংশ দিন: চাঁদের আকার কমতে কমতে আবার অর্ধেকে এসে দাঁড়ায়।
৫। অষ্টবিংশ দিন: চাঁদের আকার ছোট হতে হতে একেবারে সূক্ষ্ম সুতার মতো হয়ে দাঁড়ায়।
৬। উনত্রিংশ দিন: আকাশে আর চাঁদ দেখা যাচ্ছে না। অমাবস্যার রাত এটি। অধিদিবস (leap day)
৭। ত্রিংশ দিন: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আজও চাঁদ দেখা যাচ্ছে না। তবে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই দিন নতুন চাঁদের উদয় হয়। চাঁদ দেখা না গেলে আমরা এ দিনটিকেও অধিদিবস (Leap Day) বিবেচনা করতে পারি।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, প্রতি ৭ দিন পর পর চাঁদ একেকটা নতুন এবং চোখে পড়ার মতো দশায় পৌঁছুচ্ছে। তাই, এই ৭ দিন সময়কে চিহ্নিত করে সপ্তাহের উদ্ভব হলো। প্রচলিত ক্যালেন্ডারগুলোতে প্রতি ‘week’ এ সাত দিন থাকার এটাই মূল কারণ।
ইংরেজি ‘উইক’ (বাংলা অনুবাদে সপ্তাহই বলতে হচ্ছে) বলতেই যে, বর্তমান কালের সাত দিনের সমষ্টি বোঝায়- তা কিন্তু নয়। প্রাচীন কালে নানা দেশে নানা কালে আট দিনের সপ্তাহ, নয় দিনের সপ্তাহ এমনকি দশ দিনের সপ্তাহও প্রচলিত ছিলো। আবার ওদিকে ছয় দিনের সপ্তাহ বা পাঁচ দিনের সপ্তাহও কোথাও কোথাও প্রচলিত ছিলো।
প্রাচীন রোমে ‘আট দিনের’ সপ্তাহ চালু ছিলো। আমাদের এখনকার মতোই সাত দিন, আর অতিরিক্ত একটা দিন বরাদ্দ ছিলো বিকি-কিনি করবার জন্যে। বেচা-কেনা করবার এই দিনটি ‘হাটবার’ নামে পরিচিত ছিলো। পরে অবশ্য খ্রিস্টান অধ্যুষিত হবার পর রোমানদের ওখানে নতুন ক্যালেন্ডার চালু হয়, আর খ্রিস্ট-ধর্মের প্রভাবে হাটবার বাদ দিয়ে সাত দিনেই সপ্তাহ নির্ধারিত হয়। ৩২১ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট কন্সট্যান্টাইন এই নতুন ক্যালেন্ডার চালু করে সপ্তাহের দিন সংখ্যা ৭ এ নির্দিষ্ট করেন।
ঘুরে-ফিরে দেখা যাচ্ছে, সপ্তাহের মূল ধারণাটা সাত দিনকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে। কী গ্রিক, কী ভারতীয় কিংবা অন্য কোনো সভ্যতা, প্রায় সব ধরনের পৌরাণিক শাস্ত্রমতে, ‘সাত’ সংখ্যাটি কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বলে কিন্তু পৌরাণিক কোনো বিশ্বাসজনিত কারণে সপ্তাহে সাতটি দিন রাখা হয়েছে- এমনটি নয়। বরং, ক্যালেন্ডার তৈরি করতে গিয়ে প্রাচীন গণিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যে নিখুঁত হিসেব-নিকেশ করেছেন, তারই একটি অংশ হিসেবে সপ্তাহের দিন সংখ্যা ৭ এ এসে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাস :
পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায়, সর্বপ্রথম ব্যাবিলনীয় সভ্যতার লোকেরা সময়ের হিসাব রাখা শুরু করে। অর্থাৎ, ক্যালেন্ডার প্রচলনের ইতিহাস ব্যাবিলনীয় সভ্যতা থেকে। তারা দিন ও মাসের হিসাব রাখতো মূলত চাঁদের গতিবিধি দেখে।
সূর্যের তুলনায় চাঁদের গতিবিধি দেখে মাসের হিসাব রাখা অনেক সহজ। কারণ, চাঁদের আকৃতি সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়। কখনো এক ফালি চাঁদ, কখনো জোছনামাখা ভরাট পূর্ণিমা আবার কখনো অমাবস্যার রাতে সম্পূর্ণভাবে তিরোধান! চাঁদের এই ঘটনাগুলো আবার প্রায় ৩০ দিন পর পর পুনরাবৃত্ত হতে থাকতো। অনেক অনেক দেখে-শুনে প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রা চাঁদের গতিবিধির এই কারসাজি বুঝে গেলো এবং চাঁদের উপর ভিত্তি করে মাস গণনা শুরু করলো।
হিসাবের সুবিধার জন্য প্রতিটি চান্দ্রমাসকে আবার চন্দ্রকলার [1] ভিত্তিতে কয়েকটি সময়কালে বিভক্ত করা হলো। যেমন:
১। প্রথম দিন: চাঁদ মাত্রই উঠলো। একদম এক ফালি চাঁদ। পশ্চিমাকাশে খুব সূক্ষ্মভাবে তাকালে দেখা যায়।
২। সপ্তম দিন: চাঁদের আকার বাড়তে বাড়তে অর্ধগোলকে পরিণত হয়।
৩। চতুর্দশ দিন: চাঁদের আকার বাড়তে বাড়তে পূর্ণ গোলকে পরিণত হয়। চার দিকে ঝলমলে স্নিগ্ধ আলো ছড়ায় এই পূর্ণিমা চাঁদ। এর পর থেকেই চাঁদের আকার ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে।
৪। একবিংশ দিন: চাঁদের আকার কমতে কমতে আবার অর্ধেকে এসে দাঁড়ায়।
৫। অষ্টবিংশ দিন: চাঁদের আকার ছোট হতে হতে একেবারে সূক্ষ্ম সুতার মতো হয়ে দাঁড়ায়।
৬। উনত্রিংশ দিন: আকাশে আর চাঁদ দেখা যাচ্ছে না। অমাবস্যার রাত এটি। অধিদিবস (leap day)
৭। ত্রিংশ দিন: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আজও চাঁদ দেখা যাচ্ছে না। তবে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই দিন নতুন চাঁদের উদয় হয়। চাঁদ দেখা না গেলে আমরা এ দিনটিকেও অধিদিবস (Leap Day) বিবেচনা করতে পারি।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, প্রতি ৭ দিন পর পর চাঁদ একেকটা নতুন এবং চোখে পড়ার মতো দশায় পৌঁছুচ্ছে। তাই, এই ৭ দিন সময়কে চিহ্নিত করে সপ্তাহের উদ্ভব হলো। প্রচলিত ক্যালেন্ডারগুলোতে প্রতি ‘week’ এ সাত দিন থাকার এটাই মূল কারণ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন