বাংলা সপ্তাহে ৭ দিনের নামকরণ কিভাবে হল ?

বাংলা দিনের নামকরণ কিভাবে হয়েছিল ?

বাংলা দিনপন্জিকা অন্যান্য দিনপন্জিকার মতোই সাত দিনকে গ্রহণ করেছে এবং দিনের নামগুলো অন্যান্য দিনপন্জিকার মতোই তারকামন্ডলীর উপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে।

 


. সোমবার হচ্ছে সোম বা শিব দেবতার নাম অনুসারে।

.  মঙ্গলবার হচ্ছে মঙ্গল গ্রহের নাম অনুসারে।

.  বুধবার হচ্ছে বুধ গ্রহের নাম অনুসা।

.  বৃহস্পতিবার হচ্ছে বৃহস্পতি গ্রহের নাম অনুসারে।

. শুক্রবার হচ্ছে শুক্র গ্রহের নাম অনুসারে।

. শনিবার হচ্ছে শনি গ্রহের নাম অনুসারে।

.  রবিবার হচ্ছে রবি বা সূর্য দেবতার নাম অনুসারে।

 

বাংলা সনে দিনের শুরু শেষ হয় সূর্যোদয়ে

 

ভারতবর্ষে সপ্তাহ

ভারতবর্ষেও প্রাচীন হিন্দু জ্যোতিষীরা দেবতাদের নামে গ্রহের নাম আর গ্রহের নাম অনুসারে সপ্তাহের প্রতিটি দিনের নাম রেখেছেন। ধারণা করা হয়, তৃতীয় থেকে পঞ্চম শতাব্দীতে গুপ্ত শাসনামলে এই নামকরণ করা হয়। সংস্কৃত ভাষায় বারের নামগুলো হলো,

 

শনি> আদিত্য (সূর্য বা রবি) > সোম (চাঁদ)> মঙ্গল> বুধ> বৃহস্পতি> শুক্র

 

শনি: হিন্দু পুরাণ মোতাবেক শনি এক উগ্র দেবতা। তার কুদৃষ্টি খারাপ ফল বয়ে নিয়ে আসে। সে মূলত সূর্য তার স্ত্রী ছায়ার সন্তান।

রবি: রবি মানে সূর্য, সংস্কৃত ভাষায় বলা হয় আদিত্য। রবিবারকে সংস্কৃত ভাষায় বলে আদিত্যবার। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, সূর্যনারায়ণ বা সূর্যদেবতার নামের ভিত্তিতেই এই সূর্য বা রবির নামকরণ করা হয়েছে। সূর্যের মা হচ্ছেন অদিতি আর বাবা কশ্যপ।

সোম: সোম মানে চাঁদ। হিন্দু মিথ অনুযায়ী, দেবতা শিবের সাথে এর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। 

মঙ্গল: হিন্দু মিথ অনুযায়ী, মঙ্গল হলেন যুদ্ধের দেবতা। ইনি শিবের রক্তবিন্দু থেকে জন্ম নিয়েছেন বলে কোনো কোনো উৎস থেকে জানা যায়।

বুধ: বুধ হলো এক ঐশ্বরিক সত্ত্বা। সে বৃহস্পতি তার স্ত্রী তারার সন্তান। অবশ্য কখনো কখনো বুধকে চাঁদের (সোম) এর সন্তান বলেও সূত্রগুলো বলে থাকে।

বৃহস্পতি: বৃহস্পতি হলো সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ। হিন্দু ধর্মমতে, একে 'গুরু' বলা হয়। ইনি যার পক্ষে থাকেন, তার ভাগ্য প্রসন্ন হয়।

শুক্র: শুক্র হল অসুর দেবতাকূলের প্রধান, হিন্দু মিথ অনুযায়ী তার পুরো নাম শুক্রাচার্য।

আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, গ্রিকরা যে যে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেবতাদের নাম অনুযায় গ্রহ/বারের নাম রেখেছিলেন, ভারতবর্ষেও ঠিক সেসব বিষয় সংশ্লিষ্ট দেবতাদের নামেই গ্রহ/বারের নাম রেখেছেন। এই আশ্চর্য মিলের একটি কারণ হতে পারে- হিন্দু জ্যোতিষীগণ গ্রিক জ্যোতিষশাস্ত্র সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। কেননা, গ্রিকদের দর্শন বিশ্বাস এই সমাজে খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক থেকেই দেখা যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন